ডন ডেস্ক:
নতুন করে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। আজ শনিবার (৩ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একথা জানিয়েছেন।এদিকে জন প্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, দুই-একদিনের মধ্যে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন দেওয়ার জন্য সরকার চিন্তা করছে। দেশে বেড়েই চলছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার। প্রতিদিনই হচ্ছে নতুন রেকর্ড। শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিকেলে পর্যন্ত দেশে করোনা ভাইরাসে আরও ছয় হাজার ৮৩০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যা এখন পর্যন্ত শনাক্তে রেকর্ড। একই সময়ে মারা গেছেন ৫০ জন। দেশে এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯ হাজার ১৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ১০ মার্চ থেকে দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগী বাড়ছে। মহামারি আকার ধারণ করা করোনায় দেশে
হু হু করে বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৫০ জন। এর আগের দিন করোনায় মারা গেছেন ৫৯ জন। যা ছিল এ যাবতকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এছাড়া দেশের ইতিহাসে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৮৩০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর এত বেশিসংখ্যক রোগী আর শনাক্ত হয়নি। গত কয়েকদিনের ধারাবাহিক শনাক্ত ও মৃত্যু পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় দেশের করোনা আবারও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে যাচ্ছে। এমন এক অবস্থায় ঢাকার হাসপাতালগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা। তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ফাঁকা নেই কোনো আইসিইউ। প্রবল সংকটের মধ্যে সাধারণ শয্যা পেতেও হিমশিম খাচ্ছেন রোগীরা। পর্যাপ্ত বেড না থাকায় বহু রোগীকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে নিয়মিত। হাসাপাতালে ঘুরতে ঘুরতে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সের মারা যাচ্ছে রোগী। এছাড়াও দেখা গেছে, রাজধানীর কোভিড হাসপাতাল গুলোতে করোনা টেস্ট করাতে আসা রোগীদের দীর্ঘ লাইন। নগরীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে দেখা যায়, সিটের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ রোগী বর্তমানে ভর্তি রয়েছে। এছাড়া প্রতিদিনই সক্ষমতার চেয়ে তাদের অনেক বেশি পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। কুর্মিটোলা হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে আসা মানুষের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশই করোনা পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমনকি গত বছর যখন করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ছিল, এখন তার চেয়েও খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
কুর্মিটোলা হাসাপাতালে এক কর্মচারী জানান, গত বছরের চেয়েও এবার রোগীর চাপ বেশি। রোগীদের জটিলতা ভিন্ন। ১০০ জনের মধ্যে ৪০ জনই পজিটিভ হচ্ছেন। ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দুই সপ্তাহের জন্য ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা করেছে সরকার। সকল ধরনের জনসমাগম (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) সীমিত, উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সকল ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ, বিয়ে/জন্মদিনসহ যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এছাড়াও মসজিদসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করা, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী বহন না করা, যান চলাচল সীমিত করা, বিদেশ হতে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা,সকলসরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করা সহ ১৮ নির্দেশনা জারি করে সরকার। কিন্তু নির্দেশনা মানানোর জন্য প্রশাসনের কোনো তৎপরতা না থাকায় কেউই তা মানছে না। এতে করে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
উপদেষ্টা: বেলাল আহাম্মেদ, প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাহিদুল হক ডন, বার্তা সম্পাদক : যাবির মাহমুদ
সম্পাদকীয় কার্যালয়: মঙ্গলবাড়িয়া বাজার, কুষ্টিয়া।
মোবাইল : ০১৭১২-৮১৪০৫৯,ইমেইল : thedonnews24@gmail.com।
ই-পেপার কপি