স্টাফ রিপোর্টার:-
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আমাদের গাছ লাগানোর পদক্ষেপ অত্যন্ত সময়োপযোগী। বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাসে প্রস্থিতিতে আক্রান্তদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে অক্সিজেন, যেটা আমারা বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষের মাধ্যমে পেয়ে থাকি। মানুষের রক্ষা ও সুস্থ থাকার জন্য বৃক্ষায়নের বিকল্প নেই। বঙ্গবন্ধু সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমাদের সকলকে পরিবেশ সুরক্ষায় বৃক্ষ রোপণের গুরুত্ব কারণ সৃষ্টির বুকে প্রাণিকূলের বেঁচে থাকার পেছনে বৃক্ষের রয়েছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বৃক্ষ মূলত পরিবেশ, আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য বজায় রাখে।বন্যা, খরা, ঝড়, টর্নেডো, জলোচ্ছ্বাস, ওজনস্তর ক্ষয়, ভূমিক্ষয়, জলবায়ু পরিবর্তন, শব্দদূষণ, মাটিদূষণ, পানিদূষণ, বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করে।।এক কথায় প্রকৃতির অমূল্য ও প্রধান সম্পদ হচ্ছে বৃক্ষ। আর তাই নির্বিচারে প্রকৃতিকে ধ্বংস করতে চলেছে দামুড়হুদায় উপজেলার কার্পাসডাঙ্গায় অবৈধ ব্যবসায়ী মালেক মিয়া প্রকাশ্যে রায়সা ব্রীক্স ভাটায় ইট তৈরিতে ব্যবহার বনের কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। সরকারি নিয়ম নীতি না মেনে সম্প্রতি ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। আইন অনুযায়ী কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন নিষেধ রয়েছে। সেই সঙ্গে জন বসতির তিন কিলোমিটার মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। এ ছাড়াও আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকা; সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর, সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমি, কৃষি জমি, প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা,
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, একটি ইটভাটা বৈধভাবে চালু রাখতে হলে বিএসটিআই, পরিবেশ অধিদপ্তর, শিল্প কলকারখানা অধিদপ্তর, ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা প্রশাসকের ছাড়পত্র প্রয়োজন হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক নির্মিত উপজেলা বা ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক থেকে কমপক্ষে ১-২ (অর্ধ) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কোনো ইটভাটা স্থাপন করিতে পারবেন না। কিন্তু উপজেলার কার্পাসডাঙ্গায় রায়সা ব্রীক্স ইটভাটা মালিক মালেক মিয়া এই আইন অমান্য করে ভাটা স্থাপন করেছে। ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩-এর নীতিমালা লঙ্ঘন করে ইট ভাটাগুলো নির্মাণ করায় একদিকে যেমন আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে, তেমনি কাঠ পোড়ানো ও চিমনি ব্যবহারের ফলে এলাকার পরিবেশ প্রতিবেশীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দুষণসহ আশ পাশের বনজ ও ফলজ গাছ উজার হচ্ছে। দিনদিন ফসলি জমির মাটিঁ কাটার এই প্রবণতা বেড়েই চলছে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি ফসলি জমির উর্বরা শক্তিও আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এ ছাড়াও ফসলি জমির উপরিস্তর কেটে নেয়ার ফলে ফসলের প্রধান খাদ্য নাইট্রোজেন, পটাশ, জিংক, সালফার ক্যালসিয়ামসহ অর্গানিক বা জৈব উৎপাদনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কালোধোঁয়া ও ভাটার গাড়ি প্রতিনিয়ত মাটি ও বালু নিয়ে বেপরোয়া চলাচলে সড়কগুলোতে পথচারীদের আতঙ্কে বেড়েই চলেছে। খোলামেলাভাবে মাটি ও বালির গাড়িগুলো যাতায়াতে ধুলাবালুর কারণে মানুষের বিভিন্ন রোগব্যাধীসহ অনেকের চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফসলি জমির মাঠে ইটভাটার ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তারা প্রশাসন কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। অবৈধ রায়সা ব্রীক্স ইটভাটায় সাংবাদিক প্রবেশে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ক্রেতা পরিচয়ে রায়সা ব্রীক্স ইটভাটা ঘুরে দেখা গেছে, ইট পোড়াতে বড় বড় কাঁচা গাছের গুড়ি জড়ো করা হয়েছে। ভাটায় কর্মরত এক শ্রমিক বলেন, প্রতি চার লাখ ইট প্রস্তুত করতে ২০ থেকে ২২ দিন সময় লাগে। এতে প্রায় ৩৫ হাজার মণ কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। শুধু গাছ পুড়িয়ে নয় নির্বিঘ্নে ফসলি উর্বর কৃষি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের নামে ব্যাপক হারে মাটি উত্তোলন করছে এলাকার প্রভাবশালী অসাধু মাটি ব্যবসায়ী মালেক মিয়া ফলে এলাকার সাধারণ জমির মালিকেরা চরমভাবে হতাশ। ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার পর তা পরিবহনের জন্য পাকা ও কাঁচা সড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে। সূর্য ওঠার সাথে সাথে শুরু হয় তাদের বিচরণ। মাটি বোঝাই যন্ত্রদানব ট্রাক্টর চলাচল করার কারণে রাস্তায় মাটি পড়ে তা অন্যান্য যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। আর সড়কগুলো নষ্ট হওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শহর থেকে গ্রামীণ জনপদে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্রাক্টর। এসকল ট্রাক্টরের বৈধ রুট পারমিট নেই তাছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় ১৫ থেকে ২০ বছরের শিশু-কিশোররাও এসব ট্রাক্টর অবাধে চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। এ কারনে অনেক মায়ের কোল খালি হয়েগেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। ফলে মানুষের বিপদ ডেকে আনছে অবৈধ ব্যবসায়ী মালেক মিয়া স্থানীয় ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগ সাংবাদিকে জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গাছ পুড়িয়ে ইট তৈরির প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ইট ভাটা মালিক কর্তৃপক্ষ মালেক মিয়া। পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন নিরব থাকায় ভাটা মালিক মালেক মিয়া কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোয় বেশি উৎসহ পাচ্ছে। প্রতিদিন ইট ভাটায় হাজার হাজার মণ কাঁচা গাছ ভাটায় পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে ইট। এরই কারণে, ভাটা অঞ্চলের পরিবেশ দুষিত হলেও ক্ষমতার কারণে নিশ্চুপ ভুমিকায় এলাকাবাসী। এ ভাটার কারণে রাস্তার পাশে ফসল উৎপাদনে ব্যাঘাত পোহাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতাউর রহমান বলেন, কার্পাসডাঙ্গা রায়সা ব্রীক্স ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। মাত্র পাঁচজন লোকবল নিয়ে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় কার্যক্রম চালু রাখতে হচ্ছে।ফলে অনেক কিছুই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অবৈধ ইটভাটা মালিকদের কোন ভাটায় গাছ পোড়ানোর বৈধতা নেই। যদি কোন ভাটায় গাছ পোড়ানো হয় তাহলে সে ভাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে অবৈধ।।