মেহেরপুর প্রতিনিধি:-
মোটরসাইকেল মেকানিক্সের কাছ থেকে হুমকী ধামকী ও পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মোটরসাইকেল মিস্ত্রি জান্নাত আলী। শনিবার সকাল ১১ টার সময় গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাব ও ১২ টার সময় গাংনী প্রেসক্লাবে পৃথকভাবে এ সম্মেলন করেন তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জান্নাত আলী বলেন, আমি পেশায় একজন মোটরসাইকেল মেকানিক। আমার নিজ গ্রাম রামনগরের বাজারে আমার মোটরসাইকেল মেকানিক গ্যারেজ রয়েছে। আমার গ্যারেজে ১১ জন কর্মচারী মেকানিকেল কাজে নিয়েজিত রয়েছে। এছাড়া মেকানিকেল কাজের পাশাপাশি মোটরসাইকেলের খুচরা পার্টস বিক্রি হয়। কাজের ভীড়ের কারণে, আমিসহ আমার দোকানের কর্মচারীরা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৮/১০ টা পর্যন্ত কাজ করি। কিছুদিন আগে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে গাংনী উপজেলার বাওট গ্রামের আনু হকের ছেলে মিনারুল ইসলাম ও একই উপজেলার চরগোয়ালগ্রামের রাব্বী হোসেন নামের দুজন আমার দোকানে তাদের মোটরসাইকেল মেরামত করেন। মোটরসাইকেল মেরামত বাবদ সতের শ টাকা বিল হয়। বিল না দিয়ে বাকী রেখে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চলে আসে। পরে তাদের মোবাইল ফোন ও রাব্বী হোসেনের বাড়ি আমার পাশের গ্রাম হওয়ায় বিল চাওয়ায় আমার উপর হ্মিপ্ত হন তারা। পরে আমাকে নানা ধরনের হুমকী ধামকী দিতে শুরু করেন। আমার নামে অবেধ পোর্টাল গাংনীর চোখ, জেটিভিতে মিথ্যা বানোয়াট ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করে তারা।
এক পর্যায় একটা মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার করে চালান দেয়ারও হুমকী দেই তারা। এবং মামলা থেকে বাঁচতে হলে এসপি, ডিবি ও গাংনী থানা পুলিশকে ম্যানেজ করতে আমার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা দাবী করে রাব্বী হোসেন। সে আমাকে চরগোয়ালগ্রামের কবরস্থানের কাছে টাকা নিয়ে আসতে বলেন। আমি আমার বাবা ও দোকানের কয়েকজন কর্মচারী সত্তর হাজার টাকা নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে যায়। ওখানে যাওয়ার পর রাব্বী হোসেন আমার কাছে থাকা দুইটি মোবাইল ফোন তার কাছে নিয়ে নেই। পরে আমার সাথে চাঁদার পরিমান নিয়ে দর কশাকশি হয়। ওই সময় তার মোবাইলে এসপি সাহেব ম্যাসেজ দিয়েছে বলেও জানায়। সেই ম্যাসেজটি পড়ে শোনায়। এবং বলে এর আগে তুই এসপি সাহেবের কাছে কি বলেছিস এসপি আমাকে ম্যাসেজ দিয়ে সব জানিয়েছে। তুই টাকা না দিলে তোর নামে অপহরণ মামলা হবে। আমি তখন আতংকিত হয়ে পড়ি। পরে সত্তর হাজার টাকায় তাকে রাজী করিয়ে বলি ভাই, আমার কাছে এটাই আছে। রাব্বী হোসেন বলেন, যা এবার বাড়িতে গিয়ে আরামে ঘুমা। পুলিশ তোকে আর ধরবে না। কিন্ত ওই দিনগত রাতেই আমাকে গাংনী থানা পুলিশের এসআই জহির রাইহান আটক করেন। পরে জানতে পারি আমি একটি অপহরণ মামলার আসামী। ওই মামলার নথিপত্র তুলেছি। সেখানে আমার নাম ছিলনা। অথচ, আমাকে আটকের পর আমার নাম জড়ানো হয়েছে। আমার দোাকানের মোটরসাইকেল পার্টস আনার কাজে ব্যবহৃত আমার প্রাইভেটটি জব্দ করেছে। আমি পঁচিশ দিন হাজত খেটে জামিনে মুক্তি পেয়েছি। আমি জামিন পেয়ে বাড়িতে এসে রাব্বীর কাছ থেকে আমার টাকা ফেরৎ চেয়েছি। রাব্বী প্রথমে আমার ফোন রিসিভ করলে আমি টাকা ফেরৎ চাই। টাকার কথা বলতেই সে আমাকে বলে, সরাসরি কথা বলো বলেই ফোন কেটে দেই। আপনাদের মাধ্যমে আমার প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছে তার বিচার দাবি করছি এবং আমার কাছ থেকে নেয়া পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে নেয়া সত্তর হাজার টাকা নেওয়ায় তার বিচার দাবী করছি। আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখেছি আমার কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য সাংবাদিক পরিচয়দানকারী রাব্বী হোসেনকে এসপি, ডিবি বা গাংনী থানা পুলিশ কেউ ম্যাসেজ দেইনি এবং কেউ বলেনি। তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে আমার কাছ থেকে চাঁদাবাজি করা হয়েছে। এবিষয়ে আমি গাংনী এবং মেহেরপুরের সাংবাদিক মহল, পুলিশ সুপার মহোদয়কে জানিয়েছি। আজকে সাংবাদিক সম্মেলন করছি। এছাড়া তাদের দুজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেবো। সর্বোপরি আমি সাংবাদিক মহলের কাছে বিনয়ের সাথে সহযোগীতা প্রত্যাশা করছি।
এসময় জান্নাতের পিতা, গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের ও গাংনী প্রেসক্লাবের সভাপতি, সমপাদক ও সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।