নিজস্ব প্রতিবেদক:-
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে ফেসবুকে মিথ্যাচার করা ২ যুবককে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। কুষ্টিয়া শহরের থানা পাড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বিরুল আলম। ডিবি পুলিশ ৩০ মে ভোরে তাদের আটক করে। আটককৃত একজন পাটিকাবাড়ি নলখোলা গ্রামের মুন্সি মোখলেসুর রহমানের পুত্র মুন্সী শাহিন আহমেদ জুয়েল অপরজন থানাপাড়ার নাপিত পাড়া এলাকার অঞ্জন শিল শুভ। উন্নয়ন পরিষদ কুষ্টিয়ার সাংগঠনিক সম্পাদক শিক্ষানবিশ আইনজীবী মিজানুর রহমান মিজুর দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাদের আটক করা হয়। ভয়েজ অফ কুষ্টিয়া নামের একটি পোর্টাল এবং একটি ফেসবুক পেজ খুলে এই দুই যুবক সহ তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়ার উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্থ করার লক্ষ্যে একের পর এক মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে আসছে। গত ২৪ মে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে রডের বদলে বাঁশ, কঞ্চি দিয়ে নির্মাণ কাজ হচ্ছে বলে একটি সংবাদ প্রকাশ করে ভয়েজ অফ কুষ্টিয়া নামের ফেসবুকে পেজে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তাদের আটক করে ডিবি পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যায় তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আগামী ডিসেম্বরে চালু হতে যাওয়া কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ করে মেডিকেল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ভয় ভীতি প্রদর্শন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করে মডেল থানা । ভয়েজ অফ কুষ্টিয়া নামের ফেসবুক পেজের মালিক মুন্সী শাহিন আহম্মেদ জুয়েল একজন আদম ব্যবসায়ী বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। পাটিকাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সফর উদ্দিন বলেন, শাহিন ওরফে জুয়েল একজন জামায়াত পরিবারের সদস্য। তার পিতা এলাকার বহু হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে তাদের জমি জায়গা নিজের নামে করে নেয়। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে টাকা বিতরণকালে এলাকাবাসীর হাতে টাকার ব্যাগসহ আটক হয়ে গণধোলাই খেয়ে এবং কাতার পাঠানোর নাম করে বহু মানুষের কাছ থেকে প্রতারনা করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে এলাকা ছাড়া হয় শাহিন। কুষ্টিয়া শহরের থানা পাড়ায় মাদক সিন্ডিকেটের সাথে সংঘবদ্ধ হয়ে জেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রচার সম্পাদক ও সরকারী কলেজ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ২০ এর অধিক নাশকতা মামলার আসামীকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার ও কুষ্টিয়ার উন্নয়ন বিরোধী একটি অবৈধ পোর্টাল ও ফেসবুক পেজ খুলে সেটিকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে একের পর এক মিথ্যাচার ও সমাজে আতংক ছড়াচ্ছে সংঘবদ্ধ চক্রটি । অবৈধ ও অনিবন্ধিত ভয়েস অফ কুষ্টিয়া নামের এই পোর্টালটি দীর্ঘদিন ধরে একের পর এক মানুষের সম্মানহানী করে আসছে। সম্প্রতি এক নারীর সম্মানহানী করা ঘটনায় নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয় মুন্সী শাহীন ওরফে জুয়েলের মালিকানাধীন ভয়েস অব কুষ্টিয়া নামের ফেসবুক পেজের বিরুদ্ধে। শহরের আড়ুয়াপাড়ায় এক সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীর বাড়িতে গিয়ে চুরির ঘটনা ঘটালে সে বিষয়ে একটি মামলা হয় মডেল থানায় । এছাড়াও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন থানায় মুন্সী শাহিন ও শুভর বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক এজাহার জমা রয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা যায়। এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বিরুল আলম জানান সরকারের উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করার অসৎ উদ্দেশ্যে ফেসবুক পেজে মিথ্যাচার করায় এই অভিযোগ নিয়ে উন্নয়ন পরিষদ কুষ্টিয়ার সাংগঠনিক সম্পাদক থানায় আসেন। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে মামলা গ্রহণ করে মডেল থানা পুলিশ। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়নে দীর্ঘদিন ধরে জনমত তৈরীর কাজ করেছে উন্নয়ন পরিষদ কুষ্টিয়া। তাই এই প্রতিষ্ঠানের নির্মান সামগ্রী নিয়ে মিথ্যাচারে সংক্ষুব্ধ হয়ে তারা আইনের আশ্রয় নিতেই পারে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসির সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, এরা কোন টেলিভিশন কিংবা পত্রিকার সাংবাদিক নয়। প্রেসক্লাবের সদস্যও নয়। ফেসবুককে পুঁজি করে নানা রকম কল্পকাহিনী প্রচার করে জনগনের চরিত্র হনন এবং চাঁদা না দিলে কুষ্টিয়ার উন্নয়নে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।