বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
ফায়ার ফাইটার মেহেদী আজাদ ডুবুরি না হয়েও জিবনের ঝুঁকি নিয়ে পানির নিচ থেকে লাশ উদ্ধার করে আগামীকাল থেকে ৩দিন ব্যাপী লালন স্মরণোৎসব শুরু কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়ায় দুই গ্রুপের ব্যাপক গোলাগুলি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বজ্রপাতে নারীসহ চারজনের মৃত্যু কুষ্টিয়া আইলচারা ইউনিয়ন কৃষকলীগ নেতা কলম জোয়ার্দার এর খুটির জোর কোথায় শহিদ লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন এর মৃত্যুতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার শোকবার্তা মাগুরা ও ঝিনাইদহে সড়কে আট ঘন্টার ব্যবধানে নিহত -৫ কক্সবাজারের চকরিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করার সময় লেফটেন্যান্ট তানজিম ছরোয়ার নির্জন (বিএ-১১৪৫৩) শাহাদাত বরণ করেছেন হাটশহরিপুর ফরাজিপাড়ায় বসতবাড়িতে লুটপাট’ থানায় অভিযোগ জনি হত্যা চেষ্টা মামলায় ০৩ পৌর কাউন্সিলর গ্রেফতার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ভিআইপি কলগার্ল আটক- ৬

Reporter Name / ৮৬৩ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১, ১২:২৮ অপরাহ্ন

ডন ডেস্ক:-

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার পাশে একটি বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে দেহ ব্যবসা চলে আসলেও পুলিশ এতদিন ছিল নীরব দর্শকের ভূমিকায়। দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে অবশেষে পুলিশ ওই বাড়িতে হানা দিয়েছে। আটক করেছে ভিআইপি কলগার্ল কাকলী আক্তারসহ ৬ জনকে। শনিবার (৩ জুলাই) রাতে অসামাজিক কার্যকলাপের সময় আপত্তিকর অবস্থায় পুলিশ তাদের আটক করে। রোববার (৪ জুলাই) দুপুরে আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। জানা যায়, দৌলতপুর থানা থেকে মাত্র ১০০ গজের মতো দূরে অবস্থিত কাকলী আক্তারের বাড়িতে শনিবার রাত ১০টার দিকে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় পুলিশ কাকলী আক্তারসহ অপর তিন যৌনকর্মী এবং দুই খদ্দেরকে আটক করে থানায় নেয়। কাকলী এখানকার সবার কাছে ভিআইপি কলগার্ল হিসেবে পরিচিত। তার ডেরায় দেহ ব্যবসার পাশাপাশি মাদকের আখড়াও বসে। কাকলী নিজেও ইয়াবা ও ফেনসিডিলে আসক্ত, মাদক বিক্রির সাথেও জড়িত। সেখানে বড়লোকের বখে যাওয়া সন্তানরাসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরও যাতায়াত রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। দৌলতপুর থানার এসআই অরুণ কুমারের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে আটককৃতরা হলেন- দৌলতপুর থানা সদরের মৃত কামাল হােসেনের মেয়ে কাকলী আক্তার (৩০), দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের মানিকদিয়াড় গ্রামের রবিউল আলমের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (২৭), পার্শ্ববর্তী মিরপুর উপজেলার আমলা এলাকার রমজান আলীর দুই মেয়ে আছমা খাতুন (২৮) ও মিম খাতুন (১৯) এবং দুই খদ্দের দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বালিরদিয়াড় গ্রামের মৃত কাইম উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে স্বপন মণ্ডল (৪০) ও একই গ্রামের কাদের প্রামাণিকের ছেলে সবুজ প্রামাণিক (২৩)। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, দৌলতপুরের ভিআইপি কলগার্ল কাকলী আক্তার দীর্ঘদিন ধরে তাদের নিজ বাড়িতে রমরমাভাবে দেহ ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। সেখানে চালানো হচ্ছিল মাদকের কারবারও। রাজধানী ঢাকা ও কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে কাকলীর দেহ ব্যবসার শক্তিশালী সিন্ডিকেট। বর্তমানে লকডাউন থাকায় কাকলী দৌলতপুরের নিজ বাড়িতে এই অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। সূত্র মতে, কাকলীর বিরুদ্ধে সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করিয়ে বিভিন্ন চাকরিজীবী ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে তাদের বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইল করে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে। এলাকাবাসী জানান, কাকলী আক্তারের মা ময়না আক্তারও একই পেশায় জড়িত। তবে বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে তার চাহিদা অনেকটা কমে যাওয়ায় তিনি নিজের পেশায় মেয়েকে যুক্ত করেন। প্রায় দুই যুগ আগে ময়না আক্তার রাজধানী ঢাকায় পাড়ি জমান। ঢাকাই সিনেমার এক্সটা হিসেবে কাজ শুরু করেন। বেশকিছু গানে নাচের দৃশ্যে কাজ করলেও নিজেকে চলচ্চিত্র নায়িকা হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণার জাল বিছান তিনি। নিজের নাম বদলে ময়না আক্তার থেকে হয়ে যান তথাকথিত নায়িকা বৃষ্টি। এরপর তিনি ঢাকায় অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। একের পর এক স্বামীও বদলান ময়না আক্তার। তিনি দেহ ব্যবসা ছাড়াও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অনেকের কাছ থেকে বিপুল অর্থ বাগিয়ে নেন বলে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী জানিয়েছেন। পরে কথিত চলচ্চিত্র নায়িকা ময়না ওরফে বৃষ্টি ঢাকা থেকে নিজ এলাকা দৌলতপুরে ফিরে আসেন এবং মেয়ে কাকলী আক্তারকে একই পেশায় যুক্ত করেন। আধুনিক পোশাক পরিচ্ছদ আর বিত্তবানদের মতো চলাফেরায় মায়ের মতো কাকলীও ধীরে ধীরে ভিআইপি কলগার্ল হয়ে ওঠেন। কাকলীও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মনোরঞ্জন করে আসছিলেন। প্রভাবশালীদের সঙ্গে সখ্য থাকায় হয়ে ওঠেন আরো বেপরোয়া। মায়ের আশির্বাদপুষ্ট হয়ে তিনিও অর্থবিত্তওয়ালা অনেক ব্যক্তিকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে নাকানিচুবানি খাওয়ালেও মানসম্মানের ভয়ে কেউ টুশব্দও করেননি। পুলিশের হাতে আটক ভিআইপি কলগার্ল কাকলীসহ অন্যান্যদের থানা থেকে বের করে আদালতের উদ্দেশে নেয়া হচ্ছে। এদিকে দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে দৌলতপুর থানা পুলিশ অবশেষে আলোচিত কলগার্ল কাকলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করার ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়েছে। কাকলীকে আটকের পর থেকেই তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিতে ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। তবে শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। অনেক দেরিতে হলেও এই অভিযান পরিচালনার জন্য এলাকার লোকজন পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে কাকলীসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর ....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর