নিজস্ব প্রতিবেদক:-
কুষ্টিয়ার ৩৫টি স্থানীয় পত্রিকা বাতিলের চিঠি এখন জেলা প্রশাসকের টেবিলে। চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এই চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। ৩৫টি পত্রিকার মধ্যে কুষ্টিয়াবাসী অবাক হয়েছে ১ নম্বরে দৈনিক আরশীনগর পত্রিকার নাম দেখে। যে পত্রিকাটি ২০২০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশীর্বাদে তথ্যমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাঈদের হাত দিয়ে অনুমোদিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ডা: এসএ মালেক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী এমপি’র অংশ গ্রহণে ঐ বছরের ১১ ফেব্র“য়ারী ঢাকা পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির অডিটোরিয়ামে জমকালো প্রকাশনা উৎসবের মধ্যদিয়ে যাত্রা শুরু করে। দীর্ঘ ২১ বছর নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে দৈনিক আরশীনগর পত্রিকা। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, এনএসআই, তথ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত প্রকাশনার প্রত্যয়নপত্র রয়েছে। গতকাল পত্রিকার পাঠক এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে একই প্রশ্ন নিয়মিত প্রকাশনার পরেও এই পত্রিকাটি কি কারণে বাতিলের তালিকায় এসেছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে অনেকে ফোনে পত্রিকা অফিসে জানতে চেয়েছে। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আরশীনগর পত্রিকার অনুসন্ধানী টিম তাদের অনুসন্ধানে কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসে। ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় হাসানুল হক ইনুকে নিয়ে দৈনিক আরশীনগর পত্রিকায় যে সংবাদ প্রচার হয়েছিলো, হাসানুল হক ইনু এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বাড়ি ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ এবং একের পর এক মামলা হামলার সংবাদ উঠে আসে দৈনিক আরশীনগরে। সেই সংবাদের কথা ভুলতে পারেননি হাসানুল হক ইনু। তিনি আগামী ইউপি নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও শংকিত আরশীনগর পত্রিকা তার পিছু লাগবে। আবারও নিউজ করবে। এই আশংকা থেকে তিনি তথ্যমন্ত্রী না থেকেও সংসদে তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান। তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ ঐ কমিটির সদস্য। স্বাভাবিক ভাবেই হাসানুল হক ইনুর লোকজন রয়েছে অধিদপ্তরে। আরশীনগর পত্রিকা নিয়মিত পাঠানোর পরেও তা খাতায় তুলেনি ঐ কর্মচারীরা। এর পেছনেও কার হাত থাকতে পারে তা এখন সবার কাছে পরিস্কার। আরশীনগর পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশ এবং ফেসবুকে প্রকাশিত পত্রিকা প্রতিদিন দেশ বিদেশের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হয়। এমন একটি পাঠকপ্রিয় পত্রিকার প্রকাশনা বাতিলের অপচেষ্টা হাসানুল হক ইনু চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। কুষ্টিয়ায় অনেক পত্রিকা প্রকাশিত হয় না। ড্রয়ার ডিক্লিয়ারেশন পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল হয়নি। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পত্রিকা বাতিলের তালিকায় নেই। তালিকায় রয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং জেলা আওয়ামীলীগ নেতার সম্পাদিত নিয়মিত প্রকাশিত পত্রিকা। সারাদেশে করোনার দুর্যোগে সাংবাদিকরা ফ্রন্ট লাইনার হিসাবে কাজ করছেন, সারাদেশে চলছে কঠোর লকডাউন। ঠিক সে সময় অতি গোপনে কেন এই প্রকাশনা বাতিলের উদ্যোগ? এই বাতিলের পেছনে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা তথ্য অফিস সহ কোন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট কিংবা প্রত্যয়ন নেওয়া হয়নি। স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। একই ভাবে পত্রিকার মালিক সম্পাদকদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ দেওয়া হয়নি। পূর্বে কোন নোটিশ কিংবা কোন তথ্য চাওয়া হয়নি। এমন লুকোচুরি কেন করা হলো তা কারো বোধগম্য নয়। কুষ্টিয়ায় কঠোর লকডাউনের মধ্যেও বাতিলকৃত ৩৫টি পত্রিকার সমন্বয়ে কুষ্টিয়া সংবাদপত্র রক্ষা কমিটি গঠন হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। আজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচী ঘোষনা করেছে তারা। লকডাউন শেষ হলে আরও কঠিন ও কঠোর আন্দোলতে যাবে বলে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন। দৈনিক আরশীনগর পত্রিকার সম্পাদক হিসাবেই রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘে গিয়েছিলেন। সেই পত্রিকা বাতিলের তালিকায় আসবে এটি পাঠক সমাজের ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে।
বর্তমান মিডিয়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে বিতর্কিত করার জন্য এ এক গভীর ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন কুষ্টিয়ার সর্বস্তরের মানুষ। প্রধানমন্ত্রী কুষ্টিয়াসহ সারাদেশের সাংবাদিকদের করোনা সহায়তা অনুদান প্রদান করেছেন। সেই প্রধানমন্ত্রী করোনা দুর্যোগের সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিয়মিত প্রকাশিত পত্রিকা বাতিলের বিষয়টি অবগত আছেন বলে মনে করেন না কুষ্টিয়ার সকল সম্পাদক, সাংবাদিক ও প্রকাশক। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য জেলা প্রশাসকের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও সম্পাদকগণ।
উপদেষ্টা: বেলাল আহাম্মেদ, প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাহিদুল হক ডন, বার্তা সম্পাদক : যাবির মাহমুদ
সম্পাদকীয় কার্যালয়: মঙ্গলবাড়িয়া বাজার, কুষ্টিয়া।
মোবাইল : ০১৭১২-৮১৪০৫৯,ইমেইল : thedonnews24@gmail.com।
ই-পেপার কপি