প্রেস বিজ্ঞপ্তি:-
দীর্ঘ কয়েকযুগ পরে কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম স্বপন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি দেখে কুষ্টিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা অবাক হয়েছেন। তাদের বিবৃতিতে বেরিয়ে এসেছে কুষ্টিয়ার ৩৫টি পত্রিকা বাতিলের পেছনে কাদের হাত ছিলো? বিবৃতির এক জায়গায় উল্লেখ করেছে, ‘এই কমিটির আহবায়ক বন্ধ প্রস্তাবিত স্থানীয় দৈনিক আরশীনগর পত্রিকার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব’। দৈনিক আরশীনগর পত্রিকায় হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের প্রতিশোধ হিসাবে তিনি যে একাজটি করছেন তার প্রমান হলো এখানে আরশীনগর পত্রিকাকে ‘বন্ধ প্রস্তাবিত’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। দৈনিক আরশীনগর পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবীত একটি শক্তিশালী দৈনিক। যা কুষ্টিয়াসহ আশেপাশের জেলার জনপ্রিয় পত্রিকা। জেলা প্রশাসনসহ গোয়েন্দা সংস্থা এবং হাজার হাজার পাঠক মহল জানেন এটি বহুল প্রচারিত পত্রিকা। অথচ জাসদের বিবৃতিতে ‘বন্ধ’ শব্দটি উঠে এসেছে। এই বিবৃতিটি পুরোটায় মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, কাল্পনিক, উদ্ভট ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। জামায়াত বিএনপি ৪ দলীয় ঐক্য জোটের কুষ্টিয়া জেলার আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সভাপতির সাথে একই প্রেসক্লাবে সদস্য হয়ে আছেন জেলা জাসদের সভাপতি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সাংবাদিকদের নিয়ে বিশেষ করে সংগ্রাম, দিনকাল পত্রিকার যে প্রেসক্লাব সেটিকে জাসদ পৃষ্ঠপোষকতা করে এই বিবৃতি তা প্রমান করেছে। ডিসি কোর্ট চত্বরে প্রেস স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছেন তা জাসদের দীর্ঘদিনের নীতিহীন রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ মাত্র। কোর্ট চত্বরে দেড় হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রিন্টার থেকে শুরু করে আগুনের চুল্লির হোটেল পর্যন্ত। সে সব বিষয়ে তাদের মাথাব্যাথা না থাকলেও ছাপাখানা নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি ১৯৬৫ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক সৈয়দ সোহেল আহম্মেদ (এসএস আহম্মেদ) এর সভাপতিত্বে ডিসি কোর্ট চত্বরে স্থাপিত হয়। তথ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় হাসানুল হক ইনু’র নেতৃত্বে জেলা জাসদের সভাপতি নিজে সাংবাদিক না হওয়া সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের নিয়ে পাল্টা প্রেসক্লাব করে সেটির নেতৃত্ব দিয়েছেন। কুষ্টিয়ায় বিএনপির পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রদান করেছেন। জেলা জাসদের নেতারা টেন্ডারবাজি করে কাঁচা মাটির বাড়ি থেকে বহুতল ভবন করেছেন, অবৈধ জর্দ্দা ফ্যাক্টরির মালিকের সাথে আত্মীয়তা করে অবৈধ ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। মটর সাইকেল থেকে এখন কোটি টাকার গাড়িতে ঘুরেন সমাজতন্ত্রের বুলি আওড়ানো জাসদ নেতারা। আমলা থেকে বাসের ছাদে আসা জাসদ নেতা ঢাকায় ফ্ল্যাট, কুষ্টিয়ায় বাড়ি, কোটি টাকার গাড়িতে ঘুরেন। হাসানুল হক ইনুর সুপারিশে কুষ্টিয়ার পত্রিকা ডিক্লিয়ারেশন বাতিল হচ্ছে এমন কথা জেলা জাসদের দুই নেতা তাদের বিবৃতিতেই উল্লেখ করেছেন। কারণ রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব তার ফেসবুকে কোথাও একথা উল্লেখ করেননি। তিনি তার সম্পাদিত পত্রিকাসহ সোস্যাল মিডিয়ায় ‘যে নিউজের কারণে হাসানুল হক ইনু আরশীনগর পত্রিকা বাতিলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এখানে তার সুপারিশের কথা উল্লেখ না থাকলেও বিবৃতিতে সুপারিশের কথা তুলে ধরে প্রমান করেছেন ঠাকুর ঘরে কেরে, আমি তো কলা খায়নি। হাসানুল হক ইনু মন্ত্রী এবং এমপি হওয়ার আগে কুষ্টিয়া জেলা জাসদের স্থানীয় নেতাদের সম্পদের হিসাব এবং মন্ত্রী এমপি হওয়ার পরের হিসাব নিলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে! এর আগে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ইন্ধনে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসির উপর যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিলো আজকের এই বিবৃতিতে কেপিসিকে জড়িয়ে তাদের যে গাত্রদাহ তা প্রমান করে। বিএফইউজে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কেন্দ্রিয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে কুষ্টিয়ায় অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়। সেই জ্বালা আজকের এই বিবৃতির মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব আওয়ামীলীগের রাজনীতির ছত্রছায়ায় জোট ভাংগার যে কথা বিবৃতিতে জাসদ নেতারা উল্লেখ করেছেন তাদের জানা আছে ১৯৯২ সালে রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। ১৯৯০ সালে কুষ্টিয়া জেলা স্কুলের ১০ম ছাত্র থাকাবস্থায় জননেত্রী শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় বঙ্গবন্ধু কিশোর সংসদ গড়ে তুলেন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি এনামূল হক শামীম ও সাধারণ সম্পাদক ইসাহক আলী খান পান্না অনুমোদিত কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। সরকারি কলেজে ছাত্র শিবিরের মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন। এসব বিবেচনায় কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খাঁন ও সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আজগর আলীর সুপারিশে জননেতা মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি তাকে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে ২য় বারের মত তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক করেন। এখানে বিপ্লব আওয়ামীলীগের রাজনীতির ছত্রছায়ায় নয় বরং কুষ্টিয়ার জাসদ নেতারা আওয়ামীলীগ সরকারের ছত্রছায়ায় তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন এবং মহাজোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করছেন। ইনু সাহেব নিজে নৌকা প্রতীকে এমপি হয়ে পরবর্তী ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিপরীতে মশাল প্রতীকে প্রার্থী দিয়ে যে স্ববিরোধী রাজনীতি করে থাকেন তা জেলা জাসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এই বিবৃতি কুষ্টিয়াবাসীর সামনে তাদের রাজনৈতিক ভন্ডামি উঠে এসেছে।কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি’র সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা কুষ্টিয়া জেলা জাসদের মিথ্যাচারে ভরা এই বিবৃতিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। সেই সাথে জাসদ নেতাদের মাছ না পেয়ে ছিপে কামড় দেওয়ার বদভ্যাস ত্যাগ করার আহবান জানান।
রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব
সভাপতি
কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি