নিউজ দাতা মনোয়ার ইমাম:-
কত কয়েক দিন ধরে আফগানিস্তান বুকে কাবুলের দখল নিয়ে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়েছে আফগানিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে তালিবান মিলিয়েশিয়ার। যুদ্ধ বিদ্ধস্ত আফগানিস্তানের যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় বলডাক জেলার চামান সীমান্তে তালিবানদের রকেট হামলায় নিহত হন ভারতের রয়টার্স এর পুলিৎজার জয়ী রিপোর্টার জনাব দানিশ সিদ্দিকী। তিনি গত দুই সপ্তাহ আগে আফগানিস্তানের যুদ্ধ বিদ্ধস্ত এলাকা কান্দাহার এ গিয়ে ছিলেন খবর সংগ্রহ করতে। এমনটাই জানিয়েছেন আফগানিস্তানের কাবুলে অবস্থিত ভারতের রাষ্ট্রদূত জনাব ফরিদ মামনুনজ। তিনি বলেন এই ভারতের রিপোর্টার জনাব দানিশ সিদ্দিকী যখন কান্দাহার এ আসেন তার আগে তার সাথে সাক্ষাৎ হয়। এবং কিছু দিন আগে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসা তালিবান মিলিয়েশিয়ার সদস্যদের ছোড়া রকেট হামলায় পড়তে হয় তাকে। এবং অল্পের জন্য প্রান বাঁচাতে পারে। তখন থেকেই আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর ঘেরা থাকা অবস্থায় তিনি যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে থাকে। কিন্তু আজ আফগানিস্তানের ও পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত বলডাক জেলার চামান সীমান্তে তালিবানদের রকেট হামলায় নিহত হন। কারণ এই চামান সীমান্তে দিয়ে আফগানিস্তানের ও পাকিস্তানের মধ্যে আন্তর্জাতিক ব্যাবসা এবং বানিজ্য হয়ে তাকে কোটি কোটি মিলিয়ন মার্কিন ডলারের। তাই সব দিক থেকে এই চামান সীমান্ত এলাকায় দখল দারি নিয়ে তুমুল যুদ্ধ বাধে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তালিবান মিলিয়েশিয়ার। কিছুক্ষণ পর ধেয়ে আসে তালিবান মিলিয়েশিয়ার সদস্যদের ছোড়া রকেট। তাতেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। অন্যদিকে আজ আফগানিস্তানের ও ইরানের সীমান্ত এলাকা গজনীতে তালিবান মিলিয়েশিয়ার সদস্যদের হামলায় পিছু হটে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এবং আফগানিস্তানের ও তুর্কমেনিস্তানের সীমান্ত শহর চৌরঘন্টি এলাকা দখল করে নেয় তালিবান মিলিয়েশিয়ার সদস্যরা। এর আগে আফগানিস্তানের আশি ভাগ এলাকা দখল করে নেয়। তার মধ্যে জালালাবাদ, পাকতুন, হেলমান্দ প্রদেশ, কান্দাহার মাজাইরি ই শরীফ। এবং বুখারিস্ট, তোরাবরা সহ বিভিন্ন এলাকা। কাবুল জয়ের জন্য শেষ লড়াই করে যাচ্ছেন তালিবান মিলিয়েশিয়ার সদস্যরা। এমন খবর দিয়েছেন আফগানিস্তানের তালিবান মিলিয়েশিয়ার সদস্যদের প্রধান মুখপাত্র তারেহক ই তালিবান এর প্রধান জনাব সায়েল শাহিন। তার বক্তব্য কাবুল দখল সময়ের অপেক্ষা। তবে এর আগে প্রায় দুই দশক আগে আফগানিস্তানের দখল নিয়েছিল তালিবান মিলিয়েশিয়ার সদস্যরা। কিন্তু, ২০০১,সালে, আমেরিকায় ভয়াবহ হামলার পর তালিবান মিলিয়েশিয়ার সদস্যদের হঠাতে আফগানিস্তানের সরকার কে সাহায্য করে আমেরিকা ও ন্যাটো জোটের সদস্যরা। সেই সময় তালিবান মিলিয়েশিয়ার সদস্যদের চার ভাগে বিভক্ত ছিল। তারা কেউ ছিল তালিবান মিলিয়েশিয়ার কমান্ডার গুলবুদ্দিন হেকমোতিয়ার অধীন। কেউ ছিল তালিবান মিলিয়েশিয়ার কমান্ডার বরাহান উদ্দিন রব্বানী। কেউ ছিল তালিবান মিলিয়েশিয়ার কমান্ডার রুস্তম দোস্তোগিরের অধীন। কেউ ছিল তালিবান মিলিয়েশিয়ার কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদ এর অধীনে। তাদের ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানের বিভিন্ন স্থানে মদ জুয়া এবং মাদক ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এবং নারীদের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় হেজাব পরার জন্য। এবং নারীদের পর পুরুষদের সাথে ঘোরাফেরা নিশিদ্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে পুরুষদের দাড়ি রাখা বাধ্য করা হয়। এবং ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। সেই দিন ফিরে আসে কি না দেখার জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।