ডন ডেস্ক:-
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুষাবাড়িয়া চরপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বিকালে অত্র প্রতিষ্ঠানের মাঠে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে শোক দিবস পালন করা হয়। অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্যে রাখেন কুষাবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত শিক্ষানুরাগী রিয়াজ মালিথা। তিনি তার বক্তব্যে বলেন- আজ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। ইতিহাসের নৃশংস ও মর্মস্পর্শী রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের দিন আজ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী।
১৯৭৫ সালের এই দিনে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিল। এর মধ্য দিয়ে বাঙালির ইতিহাসে এক কালিমালিপ্ত অধ্যায় সংযোজিত হয়েছিল। সেদিন ঘাতকেরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, আরিফ, বেবি ও সুকান্ত, আবদুল নাঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর ভাগনে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণিকেও হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিলকেও সেদিন ঘাতকদের হাতে প্রাণ হারাতে হয়েছিল। তবে সেই সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। দায়মুক্তি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এসব খুনিকে বিচারের সম্মুখীন হওয়া থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিচারের উদ্যোগ নেয় এবং বিচারিক কাজ শেষে ২০১০ সালে আদালতের রায় অনুসারে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় খুনি এখনো পলাতক রয়েছে। তাদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দন্ড কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন। আলোচনা সভার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ শহিদ পরিবারের সবার রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের ওপর আলোচনা ও স্মতিচারণ করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবক আতিয়ার রহমান মালিথা। এছাড়াও বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।