নিজস্ব প্রতিবেদক:-
কুষ্টিয়ায় ঔষধ শিল্প ধ্বংসের পাঁয়তারা শুরু করেছে একটি মহল। ট্যাডিশনাল ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে কুষ্টিয়ায় ১০ টি। এছাড়া একটি এ্যলোপ্যাথিক ঔষধ কোম্পানী রয়েছে। অর্ধশত বছর পুরানোর ঔষধ কোম্পানীও রয়েছে কুষ্টিয়ায়। সারা বাংলাদেশে ট্যাডিশনাল ঔষধের মার্কেটের একটি বড় অংশ দখল করে রয়েছে কুষ্টিয়ার কোম্পানীগুলো। কোম্পানী গুলোতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে সাথে রাখার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশ থাকলেও কুষ্টিয়ায় দেখা যাচ্ছে আগে মোবাইল কোর্ট হাজির হচ্ছে পরে ঔষধ প্রশাসনকে ডেকে তাদের দিয়ে অপরাধনামা তৈরী করানো হচ্ছে। আইন শৃঙখলা বাহিনীর কথিত সোর্সরা একের পর এক ঔষধ কোম্পানীতে চাঁদা দাবী করছে, চাঁদা না পেয়ে তারা সে সকল প্রতিষ্ঠানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করাচ্ছে। কুষ্টিয়ার মাদক মামলায় মাসের পর মাস কারাভোগকারী ছেঁউড়িয়া এলাকায় হৃদয় এখন র্যাবের কথিত সোর্স হিসেবে কাজ করছে। এছাড়া লিখতে না পারা অনেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে র্যাবের সোর্স হয়েছে। যারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহরজুড়ে। সম্প্রতি এই সকল সোর্সের ইনফরমেশনে কুষ্টিয়ার ঔষধ কোম্পানীগুলোতে একের পর এক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে দেখা যাচ্ছে। মিলপাড়া এলাকায় এ্যালেক্স ফার্মা নামের একটি প্রতিষ্ঠানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে কুষ্টিয়া প্রশাসন। সেখানে মোবাইল কোর্টের শেষের দিকে ডেকে নেয়া হয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে। তাকে দিয়ে অপরাধনামা তৈরী করে কারাগারে পাঠানো হয় প্রতিষ্ঠানের মালিক রফিকুল ইসলামকে। গত বৃহস্পতিবার সকালে মিলপাড়ায় অবস্থিত ওয়েষ্টার্ন হোমিও ফার্মাতে অভিযান চালায় আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। কারখানারা কর্মচারীরা জানান, সকাল ১০ টায় আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কারখানায় প্রবেশ করে কারখানার মালিক আজিজ এবং নুরুলের মোবাইল ফোন জব্ধ করে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তারা কারখানায় অবস্থান করে। তারা ঔষধ বানানোর গোটা প্রক্রিয়াটি দেখে এবং মান নিয়ন্ত্রন বিভাগে কিভাবে মান নিয়ন্ত্রন করা হয় তা জানতে চায় এবং দেখে কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হলো যারা কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেন তারা কেউ মলিকুল বা বায়োকেমিষ্ট্রি সম্পর্কে জ্ঞাত নন। দুপুরে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ডেকে পাঠান ম্যাজিষ্ট্রেট। কারখানায় কোন রকম অবৈধ ঔষধ বা অনিবন্ধিত কোন ঔষধ পাওয়া না গেলেও পাশ্ববর্তী একটি ভবনে ড্রামে কিছু ঔষধ পাওয়ার অপরাধে তাদের উভয়কে ১ লাখ করে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি ওই ঔষধ কোম্পানীর মালিকদ্বয়কে ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এখানে আইন লঙ্ঘন করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। ঔষধ প্রশাসনের কর্মকর্তাকে সাথে না নিয়ে ঔষধ কোম্পানীতে প্রবেশ করেছে ম্যাজিষ্ট্রেট সহ আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যা আইনের পুরোপুরি লঙ্ঘন। এর পূর্বে বেঙ্গল হোমিও ল্যাবরেটরীতেও একই ভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মালিক বিশ্বনাথ পালকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। কোন রকম বিশৃংঙ্খলা না পেলেও কোন না কোন অপরাধ দেখিয়ে জেল জরিমানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্রিফিংয়ে ভেজাল ঔষধ শব্দটি ব্যবহার করা হলেও ট্রেষ্টিং ল্যাবরেটরীর রিপোর্ট ছাড়া একটি বৈধ কারখানার কোন ঔষধকে ভেজাল বলার কোন সুযোগ নেই বলে জানান ঔষধ বিশেষজ্ঞরা। এদিকে একই দিনে সায়েম ফুড প্রোডাক্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠানে বিপুল পরিমান অবৈধ যৌন উত্তেজক সিরাপ পাওয়া গেলেও তার মালিক মিজানুর রহমানকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়। বৈধ ঔষধ কোম্পানীর মালিককে কারাদণ্ড আর অবৈধ যৌন উত্তেজক তৈরী কারীর জরিমানার ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ মোবাইল কোর্ট। ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দুপুর দেড়টায় তাকে ফোন দিয়ে ডাক দেন ম্যাজিষ্ট্রেট খাদিজা। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৈরীকৃত ঔষধ পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক জানান তার যাওয়ার আগে থেকেই ম্যাজিষ্ট্রেট এবং আইন শৃংঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা ওই ঔষধ কোম্পানীতে উপস্থিত ছিলেন। কুষ্টিয়ার উন্নয়নের রূপকার মাহবুবউল হানিফ এমপির হাত ধরে যখন কুষ্টিয়ায় একের পর এক উদ্যোক্তা তৈরী হচ্ছে তখন অনাকাঙ্খিত এই ধরণের ঘটনায় হতাশার সৃষ্টি হচ্ছে কুষ্টিয়ার নতুন উদ্যোগতারদের মাঝে। এব্যাপারে কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ীদের ধ্বংসের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। বিষয়টি মাহবুবউল আলম হানিফ এমপিকে অবহিত করা হয়েছে।
উপদেষ্টা: বেলাল আহাম্মেদ, প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাহিদুল হক ডন, বার্তা সম্পাদক : যাবির মাহমুদ
সম্পাদকীয় কার্যালয়: মঙ্গলবাড়িয়া বাজার, কুষ্টিয়া।
মোবাইল : ০১৭১২-৮১৪০৫৯,ইমেইল : thedonnews24@gmail.com।
ই-পেপার কপি