ডন ডেস্ক:-
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নে চলছে একাধিক অবৈধ ইটভাটা। পুড়ছে কাঠ। বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ ও ফসলের মাঠ। ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের তোয়াক্কা না করে ড্রাম চিমনি ব্যবহার করে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষেধ। তা সত্ত্বেও বছরের পর বছর ওই সব ভাটা বহাল তবিয়তে ইট তৈরির কাজ অব্যাহত রেখেছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসন সাময়িক জরিমানা করলে বা চিমনি ভেঙে দিলেও কয়েক দিনের মধ্যেই আবারও ইটভাটা প্রস্তুত হয়ে যায়।সরেজমিন যদুবয়রা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে ফসলের মাঠজুড়ে ড্রাম চিমনির টি জে ব্রিকস নামের একটি ভাটায় কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি চলছে। পাশেই স্তূপ করে রাখা হয়েছে গাছের গুঁড়ি ও চেরাই কাঠ। ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ডিসেম্বরের শুরুতে ভাটার প্রস্তুতি শুরু হয়। এরপর টানা মার্চ মাস পর্যন্ত এ ভাটায় কাঠ ব্যবহার করে ইট তৈরি হয়। ভাটার ম্যানেজার বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে ভাটার অনুমোদন নিয়েছেন। তবে ড্রাম চিমনির কারণে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নেই। কিন্তু প্রতি বছর ভাটা শুরু আগে ‘ম্যানেজ’ করতে হয় তাদের। বেশি চাপাচাপি হলে দর দামও বেশি হয়। একটু দূর এগোতেই আরো কয়েকটি ভাটা রয়েছে।এ ভাটার চেহারাও আগের ভাটার মতোই। এখানেও ড্রাম চিমনি ও কাঠ দিয়েই পোড়ানো হয় ইট। আর অনুমোদন ও ম্যানেজ প্রক্রিয়াও একই রকম বলে জানালেন ভাটার ব্যবস্থাপক। পরিবেশ অধিদফতরকে প্রতি বছর টাকা দিয়েই নিশ্চিন্তে ইট পোড়ানো হয় অবৈধ এসব ভাটায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করে স্থানীয় প্রশাসন। গুঁড়িয়ে দেয়া হয় চিমনি,পানি ঢালা হয় চুল্লিতে। কিন্তু ভাটা মালিকরা ফের চিমনি তৈরি করে সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ভাটা প্রস্তুত করে আবারও ইট পোড়ানোর কাজ শুরু করে দেন। ওই সব এলাকার একাধিক বাসিন্দাদের সঙ্গে ভাটার বিষয় নিয়ে কথা হয়। তারা বলেন, প্রশাসন তো দেখছে ভাটাগুলো অবৈধ ও ইট তৈরির প্রক্রিয়াও অবৈধ। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং সুবিধা নিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে। কুষ্টিয়া পরিবেশ ক্লাবের সভাপতি হাজী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনে লাইসেন্স ব্যতিত ইট প্রস্তুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ধারা ৮-এর ‘ঘ’তে বলা আছে, কৃষিজমি ব্যবহারে সম্পূর্ণ নিষেধ। ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের গাফিলতিকে দায়ী করে তিনি বলেন, সরকারকে ইটভাটার ক্ষতির দিকগুলো তুলে ধরে যথাযথ আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আমরা চেষ্টা করেছি।