কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়ায় আজ (১৫ মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও লালন একাডেমি এর আয়োজনে। এরই মধ্যে অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। লালন একাডেমি কর্তৃপক্ষও মেলা প্রাঙ্গণকে সাজিয়েছে নতুন রূপে।
জানা গেছে তিন দিনব্যাপী এ উৎসবে থাকছে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলা। আজ সন্ধ্যায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ইসমাইল হোসেন উদ্বোধন করবেন এই আয়োজন। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন, বিপিএম (বার), কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম প্রমুখ। তিন দিনের আয়োজনের দ্বিতীয় দিন প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ (এমপি)। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর। তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ এমপি। কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ: কা: ম: সরোয়ার জাহান বাদশাহ্ এমপি।
লালন একাডেমীর এডহক কমিটির সদস্য সেলিম হক বলেন, লালন সাঁইজির স্মরণোৎসব উপলক্ষে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লালন ভক্ত বৃন্দ চলে এসেছেন লালন মাজার প্রাঙ্গণে। তাদের মুখে মুখে সাঁইজির বাণী। তিনি আরো বলেন।এই উৎসবে বাউল সাধক ভক্ত আশেকানদের আখড়া বাড়িতে আসতে কোনও আমন্ত্রণ লাগে না। আবার প্রথার বাইরেও তারা কিছু করেন না। লালন মাজারের প্রধান খাদেম ফকির মহম্মদ আলী শাহ বলেন ১২৯৭ বঙ্গাবদ্ধের পহেলা কার্তিক সাধক শিরোমনি লালন সাঁইজি মৃত্যুর সময় শিষ্যদের বলেছিলেন। আমি কোনও ধর্মের লোক নয় থাকার ঘরেই আমার সমাধি হবে। আর সে সময় আমার গান চলবে। এরপর থেকে প্রথমে লালন অনুসারীরা পরে আখড়া কমিটি ও লালন একাডেমি এই উৎসব পালন করে আসছে। জাত পাত ভুলে দেশ বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত অনুসারী এরই মধ্যে আখড়া বাড়ি ও আশপাশের এলাকায় আসতে শুরু করেছেন। এদিকে আখড়া প্রাঙ্গণের মঞ্চ এরই মধ্যে প্রস্তুত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য। আর মেলা চত্বরসহ কালিগঙ্গা নদীর তীর এলাকায় হরেক রকমের পণ্যের পসরা বসিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তবে গোটা আয়োজনের জন্য পুলিশ প্রশাসও সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসপি খাইরুল আলম বলেন উৎসব নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । পুরো এলাকা আমরা সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে এসেছি । কালী নদীতে থাকবে নৌ টহল গোয়েন্দা তৎপরতা ও শহর কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার থাকবে মেলার সময়।
লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ডিসি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন ফকির লালন শাহের স্মরণোৎসব উপলক্ষে এখানে আসা দেশ বিদেশের লালনপ্রেমী অনুসারীদের থাকা খাওয়াসহ তাদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । অনুষ্ঠানের গোটা এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় এনেছি । আশা করি মেলায় কোনও ধরনের সমস্যা হবে না।
উল্লেখ্য বাংলা ১২৯৭ সালের ১ কার্তিক প্রয়াণ হয় বাউল সম্রাট লালন শাহের। এরপর থেকেই কালিগঙ্গা নদীর তীরে পালিত হয়ে আসছে লালন স্মরণোৎসব। অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রতিবছর লালনের আখড়া বাড়ি কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় সমাগম হয় হাজার হাজার মানুষের। এ উৎসবকে ঘিরে দেশ-বিদেশ থেকে দলে দলে মানুষ ছুটে আসেন লালনের আখড়ায়। কয়েক দিন আগ থেকেই লালন ভক্ত ও বাউলরা আখড়াবাড়িতে হাজির হন।
উপদেষ্টা: বেলাল আহাম্মেদ, প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাহিদুল হক ডন, বার্তা সম্পাদক : যাবির মাহমুদ
সম্পাদকীয় কার্যালয়: মঙ্গলবাড়িয়া বাজার, কুষ্টিয়া।
মোবাইল : ০১৭১২-৮১৪০৫৯,ইমেইল : thedonnews24@gmail.com।
ই-পেপার কপি