ডন ডেস্ক:-
কুষ্টিয়ার খোকসায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র ও রুটিন মেরামত কাজের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুদক পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করেছে। আরো পৃথক তিনটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে। মঙ্গলবার কুষ্টিয়া আদালতে দায়ের কৃত মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আখতারসহ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি তিনজন সভাপতি, এসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, উপজেলা প্রকৌশলী এবং একজন সহকারী শিক্ষা অফিসার কে আসামী করা হয়েছে। দুদকের পক্ষে পৃথক তিনটি মামলার এজাহার করেছেন উপপরিচালক (সংযুক্ত) মোঃ আলমগীর হোসেন। দুদকের মামলার নথিসূত্র জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে শিা অধিদপ্তর থেকে উপজেলা বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত ও উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ আসে। বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে কাজ না করেই বেশির ভাগ স্কুলের প্রধান শিক, পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, শিক সমিতির নেতা ও উপজেলা প্রাথমিক শিা অফিসের কর্মকর্তারা ভুয়া বিল ভাউচারে অর্থ তুলে আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ ওঠে। দুদকের তদন্তে অভিযোগের প্রমান মেলে। এর আলোকে ৬ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি, এসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক প্রধান কার্যালয়। এ সিদ্ধান্তের আলোকে প্রথম দায়ের করা পৃথক তিনটি মামলায় আসামী করা হয়েছে, উপজেলার মাছুয়াঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক বিকর্ণ কুমার বিশ্বাস, খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বাবুল আখতার, মামুদানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক অসীম কুমার বিশ্বাস, সভাপতি মাহিমা রঞ্জন মৈত্র, ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক হাফিজুর হক, সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং স্থানীয় সরকারী প্রকৌশলী অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুস সামাদ ও সহকারী শিক্ষা অফিসার হোসাইন মোহম্মদ বেলাল। আসামীদের বিরদ্ধে দন্ডবিধি ৪০৯/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং ৫(২) ধারায়। দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় দায়ের করা মামলা নম্বর ৬, ৭ ও ৮। তারিখ ১৯ এপ্রিল ২২ ইং। উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবছরে শিা অধিদপ্তর থেকে উপজেলা বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষদ্র মেরামত ও উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ আসে। বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে কাজ না করেই বেশির ভাগ স্কুলের প্রধান শিক, পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, শিক সমিতির নেতা ও উপজেলা প্রাথমিক শিা অফিসের কর্মকর্তারা ভুয়া বিল ভাউচারে অর্থ তুলে আত্মসাৎ করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক সমন্বিত কুষ্টিয়া কার্যালয়ের উপপরিচালক জাকারিয়া সরোজমিন তদন্ত করে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে কোন কাজ হয়নি দেখতে পান। দুদক কর্মকর্তারা তদন্ত কালে এসব স্কুলে মাটি ভরাটসহ অন্য যেসব সংস্কার কাজ হওয়ার কথা ছিল তার কিছুই হয়নি বলে জানতে পারেন। তদন্ত শেষে মামলার আরজি জানিয়ে দুদক প্রধান কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এরপর দুর্নীতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বিভাগীয় কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে মামলা করার পাশাপাশি তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদারকি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কয়েকজন প্রধান শিক জানান, দুর্নীতির বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর উপজেলা প্রাথমিক শিক সমিতির সভাপতি আবু হানিফ দুদক কর্মকর্তাকে ম্যানেজের কথা বলে ৮৭টি বিদ্যালয় থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে চাঁদা তোলেন। তবে দুদক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করতে না পারলেও আবু হানিফ সে অর্থ আর ফেরত দেননি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাছুয়াঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বাবুল আখতার বলেন, দুদুক তার কাছে কোন বিষয়ে জানার চেষ্টা করেনি। মামলা হয়েছে আইনগত ভাবে মোকাবেলা করা হবে। এই মামলা প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক জাকারিয়া রহমান জানান, কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জর্জ আদালতে মামলা তিনটি বিচারিক কাজ চলবে। আসামীদের বিরুদ্ধে সমান অথবা গ্রেফতারের বিষয় আদালতের এখতিয়ার।