সামরুজ্জামান (সামুন),কুষ্টিয়া:-
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার বিকাল ৪ টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠাটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন বিশ্বকবির ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এবারের আয়োজনে কুঠিবাড়ির মূল মঞ্চে প্রতিদিনই আলোচনা সভার পাশাপাশি জেলার ৬০টি সংগঠনসহ জাতীয় পর্যায়ের প্রায় ৬০ জন শিল্পী কুঠিবাড়ির মূল মঞ্চে রবীন্দ্র সংঙ্গীত, কবিতা আবৃতি, দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করা হবে।
এছাড়া কুঠিবাড়ি চত্বরে বসেছে গ্রামীন মেলা। নানা রকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা। ৩য় বারের মতো জাতীয়ভাবে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম উৎসব পালন করা হচ্ছে। ঐতিহাসিক এই উৎসবকে নির্বিগ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
প্রথম দিনে কুঠিবাড়ির মূল মঞ্চে আলোচনা সভায় সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া ৪ আসনর সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। আলোচনা সভায় স্বারক বক্তব্য রাখেন প্রফেসর সনৎ কুমার সাহা। এর আগে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি রবীন্দ্র ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত বকুল তলার পাশেই বৃক্ষ রোপন করেন। আলোচনা সভা শেষে মূল মঞ্চে রবীন্দ্র সংঙ্গীত, কবিতা আবৃতি, দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করছেন কুষ্টিয়া জেলা ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ের রবীন্দ্র শিল্পীরা। এদিকে তিনদিনের এই জন্ম উৎসবকে ঘিরে রবীন্দ্রপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের ভিরে মুখর এখন কুঠিবাড়ি প্রাঙ্গণ। করোনার কারনে গত দুই বছর এই অনুষ্ঠান না হওয়ায় এবারের আয়োজনকে ঘিরে তাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে এই অঞ্চলের জমিদারী পান। পরবর্তি সময়ে ১৮৮৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে জমিদার হয়ে আসেন। এখানে শিলাইদহে তিনি ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারী পরিচালনা করেন। এখানে অবস্থান কালে তিনি রচনা করে তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালীসহ আরও বিভিন্ন গ্রন্থ। রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে বসেই গীতাঞ্জলী কাব্য গ্রন্থের অনুবাদের কাজ শুরু করেন। পরে ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী গ্রন্থের অনুবাদে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। এখানে বসে রচনা করা বিশ্বকবির অসংখ্য গান,কবিতা ও সাহিত্যকর্ম বাঙলা সাহিত্যকে করেছে সমৃদ্ধ। তাই রবীন্দ্র সাহিত্যে শিলাইদহের গুরুত্ব অন্যতম।