নিজস্ব প্রতিনিধি:-
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এসবিএসএল ( সানরাইজ বিজনেস সার্ভিস লিমিটেড) কোম্পানির প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে বুধবার রাতে তুলে নিয়ে যাওয়ার ২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিবারের লোকজন তাদের সন্ধান না পেয়ে কুমারখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। জানা যায়, এসবিএসএল নামে ( মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানি) কোম্পানি খুলে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার সাজ্জাদ হোসেন ও মহেশপুর থানার মহসিন আলী এবং কুমারখালীর পান্টি ইউনিয়নের গোবরা গ্রামের আল- ইমরান তুষার প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। তারা কুমারখালী উপজেলার আইয়ুব আলী (৩৫), মোস্তফা রাশেদ পান্না (৪৭), হাফিজুর রহমান (২৬), হাসান আলী (৩০) ও হান্নান (৪০) সহ একাধিক ব্যক্তিকে নিয়ে একটি শক্তিশালী প্রতারক চক্র গড়ে তুলে তাদের মাধ্যমে পাঁচশত পরিবারের নিকট থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় । টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর অধিকাংশ সদস্যরা গা ঢাকা দিলেও আইয়ুব, হাসান, হান্নান ও রাসেদ মাস্টার এলাকায় আত্নগোপন করে ছিলো। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই পাঁচজন এসবিএসএল নামে একটি অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই ব্যবসায় তাদের বস ছিলেন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের গোবরা গ্রামের মো. তফসের হোসেনের ছেলে মো. ইমরান হোসেন (তুষার)। তুষারের কার্যালয় ছিল পান্টি বাজার এলাকার নৌশের মোড়ে। প্রায় ছয় মাস আগ এসবিএসএল কোম্পানি গ্রাহকের টাকা নিয়ে হওয়া হয়ে যায়। সেই থেকে তুষার পলাতক রয়েছেন। এদিকে গোবরা চাঁদপুর গ্রামের এসবিএসএল কোম্পানির ফিন্যান্স ডিরেক্টর আল ইমরান তুষার আত্নগোপনে থাকা অবস্থায় তার বাবার অসুস্থতার সংবাদ পেয়ে দেখতে আসলে বুধবার রাতে তাকে সহ আইয়ুব, রাসেদ, হাফিজ, হাসান ও হান্নানকে প্রশাসনের পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তুলে নেওয়া ৫ পরিবারের লোকজন কুমারখালী থানা ও ডিবি অফিসের কোথাও তাদের স্বজনদের খুঁজে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন এবং কুমারখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
অপরদিকে এসবিএসএল এর প্রতারক চক্রের সদস্যদের তুলে নেওয়ার সংবাদ শুনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার দলে দলে কুষ্টিয়া র্যাব অফিস ও কুমারখালী থানায় তাদের টাকা ফিরে পাবার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এরমধ্যে অনেক এলাকায় মিষ্টি বিতরণের সংবাদ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে নিখোঁজ হাফিজুরের চাচা তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, বুধবার রাত ১১টার দিকে ১০ থেকে ১২ জন লোক বাড়িতে এসে হাফিজকে ডাক দেয়। হাফিজ বাইরে আসলে তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয় এবং তাকে তুলে নিয়ে যায়। এখনও সন্ধান পাইনি ভাতিজার। থানায় জিডি আকারে অভিযোগ দিয়েছি। নিখোঁজ আইয়ুব আলীর স্বজন ও বাগুলাট ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার (সদস্য) তারেক আজিজ টিক্কা বলেন, বুধবার রাতে প্রশাসনের পরিচয় দিয়ে আইয়ুবকে তুলে নিয়ে গেছে। কুমারখালী থানায় খোঁজ নিয়েও কিছু জানতে পারিনি। পরে থানায় জিডি করেছি। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, হেডকোয়ার্টার সূত্রে জানতে পেরেছি রাতে র্যাবের একটি টিম অভিযান চালিয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, কুমারখালীতে এ রকম কোনো অভিযান চালানো হয়নি, কাউকে আটক করাও হয়নি। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, বুধবার রাতে ডিবি পুলিশ কোনো অভিযান চালায়নি। জিডির সূত্র ধরে নিখোঁজদের পুলিশ খোঁজাখুঁজি করছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।