ডন ডেস্ক:-
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সাধুসঙ্গে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকারের প্রতিবাদে উগ্রবাদী, সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্তদের উপযুক্ত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১০ টার সময় লালন একাডেমির মাজারের সামনে এই মানববন্ধন করেন আহত বাউল ও সম্মিলিত লালন ভক্তবৃন্দ সাধুরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া লালন একাডেমির এডহক কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা তাইজাল আলী খান,এডহক কমিটির আরেক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন সম্মিলিত লালন ভক্তবৃন্দদের পক্ষে মানববন্ধনের আয়োজক সুফি সাজেদুল ইসলাম ডালিম,দৌলতপুর সাধুভক্ত অনুসারী ফকির ফজল সাই,ফকির সফি সাই, ফকির মইনুদ্দিন সাই সহ কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকার লালন ভক্তবৃন্দরা। মানববন্ধন চলাকালীন সময় কুষ্টিয়ার পুলিশ প্রশাসন নিরাপত্তা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন, লালন অনুসারী ভক্তবৃন্দ সাধুরা খুবই শান্তশিষ্ট প্রকৃতির মানুষ। তারা কোন প্রকার অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত হয়না। সাধুদের উপর এভাবে হামলা করা খুবই অন্যায় কাজ। যারা এই হামলার সাথে জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে সঠিক বিচারের দাবি জানান বক্তারা। সাধুদের সুত্রে জানা যায়, শনিবার গত ৫ নভেম্বর দিবাগত রাতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লাউবাড়িয়া এলাকায় ভক্তের বাড়ি সমবেত হয়েছিলেন সাধুরা। সেখানেই বেধড়ক পেটানো হয়েছে তাদের। গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন পাঁচ নারী-পুরুষ। সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ গুরুতর আহত হয়েছেন বৃদ্ধ ফজল ফকির যার বয়স নব্বইয়ের ঘরে। পিটিয়ে যখম করা হয়েছে ফকিরানীদেরও। লালন দর্শনের অনুসারী সাধু-ফকিরদের দাবি, ভক্ত পলানের বাড়িতে ফকির তাত্বিক আলোচনার জন্য নতুন জায়গা করা হয়েছিলো। এটা তার বসতবাড়ির মধ্যেই। তাদের বেশ কয়েকজনকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সবাই সেখানে গিয়ে সাধুদের রীতি অনুসারে সান্ধ্য কালীন কর্মসূচি পালনকারী, এশার আজানের পর রীতি অনুসারে তাদের কার্যক্রম করেন। সেখানে কোন, মাইক বা সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা হয়নি। কোন বাদ্যযন্ত্র ছিলো না, গান-বাজনাও হয়নি, আগে কেউ কোন অভিযোগও জানায়নি। হঠাৎ বাড়িটির চারপাশে কিছু লোক ঘিরে ফেলে এবং ইটপাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর করে৷ তারা বাড়িতে প্রবেশ করে উপস্থিত ১৫-২০ জন সাধু তারিকার মানুষকে বেধড়ক লাঠিপেটা করে, বৃদ্ধ বা নারী কাউকেই ছাড় দেয়া হয়নি। কয়েকজন সাধু দৌলতপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ,থানায় লিখিত অভিযোগ দেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল জব্বারকে মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানান। ফকিরদের দাবি, অকারণে তাদের লাঞ্ছিত ও আহত করা হয়েছে, তারা পালিয়ে সেখান থেকে প্রানে বেঁচেছেন। এছাড়াও হামলাকারীদের কাছে হাত জোড়া করে ক্ষমা চাইতে গেলে তারা মেরে বৃদ্ধ ফজল ফকিরের হাত ফাটিয়ে দেয়। দু’হাতে বেশ কয়েকটি সেলাই লেগেছে এই ফকিরের বলে জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।