ঠিকাদার প্রকৌশলীর ভুলে লাইনম্যান নিহত,মুমূর্ষু মিস্ত্রি ডন ডেস্ক:-
কুষ্টিয়া কুমারখালী পৌরসভার খোকনমোড় এলাকার এদুর্ঘটনা ঘটে। বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে উন্নয়ন কাজ করছিলেন ঠিকাদারের শ্রমিকরা। বেলা দুইটা পর্যন্ত বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ থাকার কথা ছিল। কিন্তু বিদ্যুত অফিস থেকে দেড়টার দিকে লাইন চালু করে দেয়। এতে বিদ্যুতায়িত হয়ে একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এঘটনায় গুরুতরু আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন হেড মিস্ত্রি। শনিবার (১১ মার্চ) বেলা দেড়টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার খোকনমোড় এলাকার এদুর্ঘটনা ঘটে। নিহত লাইনম্যানের নাম মো. মানিক হোসেন (৪০)। তিনি উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের জয়নাবাদ গ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে। আর আহত হেডমিস্ত্রি একই এলাকার মৃত তছলেম হোসেনের ছেলে রাজু হোসেন (৪৫)। শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুত অফিসের রাজু স্যারের সাথে তাঁদের নিয়মিত কথা হচ্ছিল। দুইটা পর্যন্ত বিদ্যুতের লাইন বন্ধ রাখার কথা ছিল। কিন্তু দেড়টার দিকেই লাইন চালু হলে এদুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কেউ ছিলোনা। তবে বিদ্যুতের কর্মকর্তারা অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, শ্রমিকরা এক অঞ্চলের লাইন বন্ধ করে অন্য অঞ্চলে কাজ করছিলেন। ঠিকাদারের ভুলেই এদুর্ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, কুমারখালীর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ড্রিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের(ওজোপাডিকোলি) পৌরসভার খোকনমোড় এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ করছিলেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা। উন্নয়ন কাজের জন্য বেলা দুইটা পর্যন্ত বিদ্যুত লাইন বন্ধ রাখার কথা বলেছিলেন সহকারী প্রকৌশলী মো. রাজু হোসেন। কাজ চলাকালীন সময়ে শ্রমিকদের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে রাজুর সাথে কথা হয়েছিল শ্রমিকদের। কিন্তু বেলা দেড়টার দিকে লাইন চালু হলে বিদ্যুতায়িত হয়ে লাইনম্যান মানিক ও হেডমিস্ত্রি রাজু গুরুতর আহত হন। পরে অন্যান্য শ্রমিকরা তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মানিককে মৃত ঘোষণা করেন এবং উন্নত চিকিৎসার রাজুকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এবিষয়ে শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁরা খোকনমোড়ে কাজ করছিলেন। রাজু স্যারের সাথে তাঁদের বারবার কথা হচ্ছিল। দুইটা পর্যন্ত লাইন বন্ধ থাকার কথা ছিল। কিন্তু আগেই লাইন চালু হলে দুর্ঘটনায় মানিক মারা যায় এবং হেডমিস্ত্রি আহত হন। চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বর (জয়নাবাদ)রিপন হোসেন, বিদ্যুতের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের লোকজনের অবহেলায় একজন মারা গেছে এবং একজন আহত হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানান তিনি।
জানতে চাইলে মুঠোফোনে কাজের ঠিকাদার ময়েজ উদ্দিন বলেন, তিনি অন্য সাইডের কাজে ছিলেন। লাইন বন্ধ রাখার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লাইন চালু হওয়ায় এদুর্ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছেন। তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন। শ্রমিকদের অভিযোগ অস্বীকার করে কুমারখালী ওজোপাডিকোলি’র প্রকৌশলী মো. মখলেছুর রহমান ও সহকারী প্রকৌশলী রাজু হোসেন বলেন, এক অঞ্চলের লাইন বন্ধ করে শ্রমিকরা অন্য অঞ্চলে কাজ করছিলেন। ঠিকাদারের ভুলেই এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। কুমারখালী থানার ওসি মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, বিদ্যুত অফিস দুইটার পরিবর্তে দেড়টার দিকে লাইন চালু করায় এদুর্ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেলে তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।