সামরুজ্জামান (সামুন), কুষ্টিয়া
প্রথমে পুরুষ গায়কের পালা তাই বাউল বেশি গায়ক গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে বিশেষ ভঙ্গিমায় গেয়ে উঠলো- যেখানেই যাওনা নারী যাহাই করনা স্বামীরই পদতলেই হবে তোমার শেষ ঠিকানা ইত্যাদি ইত্যাদি। শেষ হতেই দর্শকদের জোরালো করতালি। হাততালির শব্দ শেষ না হতেই নারী গায়িকা উচ্চ সুরে গেয়ে উঠলেন পরানের বান্ধবরে, বুড়ি হইলাম তোর কারণে–। বিশেষ ভঙ্গিমায় গানের মাধ্যমে তিনিও প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন নারী ছাড়া পুরুষরা অচল। আবারো দর্শকদের জোরালো হাততালি। এভাবেই গভীর রাত বা কখনও ভোর পর্যন্ত চলতে থাকে পালা গান। অশ্লীলতা বিবর্জিত ও পরিবারের সকলেই একসাথে উপভোগ করতে পারে বলে গ্রাম-বাংলার জনসাধারণের কাছে পালা গানই ছিল বিনোদনের অন্যতম উপায়। কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের জয়নাবাদ কারিগড়পাড়া জামাল সাধুর বাড়িতে (১৭ মার্চ) শুক্রবার রাত ৯ টায় সময় তৃতীয় বার্ষিক ঐতিহ্যবাহী পালা গান অনুষ্ঠিত হয়েছে। জয়নাবাদ গ্রামের সমাজ প্রধান দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক মনজু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য গোলাম মোস্তফা, চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার মাজেদা বেগম, ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার রিপন মন্ডল। পালা গান পরিবেশন করেন পাবনা জেলার দেশ বরেণ্য পালাকার শওকত আলী ও কুষ্টিয়া জেলার মেয়ে আয়েশা সরকার। অনুসন্ধানে জানা গেছে, পালা গান বিষয়ভিত্তিক হয়ে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হলো শরিয়ত-মারফত, মাতা-পিতা, স্বামী-স্ত্রী, গুরু-শিষ্য, হিন্দু-মুসলমান ইত্যাদি। গায়করা গান শুরুর পূর্বে দর্শকদের কাছে মতামত জানতে চায়। বেশিরভাগ দর্শক যেটি শুনতে চান সেই বিষয়েই তারা পালা গান শুরু করেন।