নিজস্ব প্রতিনিধি:-
কুষ্টিয়ায় অপারেশন থিয়েটারে ফিরোজা খাতুন (৪৫) নামে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় রোগীর স্বজনদের মারধরের শিকার হয়েছেন চিকিৎসক। সোমবার (১৯ জুন) বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের আদ-দ্বীন হাসপাতালে ওই নারীর মৃত্যু হয়। পরে তার স্বজনরা অভিযুক্ত চিকিৎসক আমিরুল ইসলামকে বেধড়ক মারধর করেন। চিকিৎসককে মারধরের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। চলছে আলোচনা-সমালোচনাও। মৃত ফিরোজা খাতুন কুষ্টিয়া শহরের জিকে পুরাতন বালুঘাট এলাকার আইয়ুব আলীর স্ত্রী। ওই রোগীর স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফিরোজা খাতুন রোববার (১৮ জুন) সকালে পিত্তথলিতে পাথর অপারেশনের জন্য আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন। সোমবার (১৯ জুন) সকালে অপারেশনর সময় রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে মান্নান হার্ট হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নেওয়ার আগেই ওই রোগীর মৃত্যু হয়। এদিকে অপারেশন থিয়েটারে রোগীর মৃত্যুর খবরে ক্ষুব্ধ স্বজনরা অভিযুক্ত চিকিৎসককে হাসপাতালের মধ্যেই মারধর করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মৃত ফিরোজা খাতুনের ছেলে অনিক আহমেদ বলেন, মাকে সুস্থ অবস্থায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর আমি অপারেশনের জিনিসপত্র কিনতে বাইরে যাই। আসার পর চিকিৎসক আমিরুল ইসলাম বলেন, রোগী অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে, অপারেশন করতে পারবো না। তারপরই আমার মায়ের মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার আদ-দ্বীন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার আব্দুল কাদের বলেন, ফিরোজা খাতুন নামে ওই রোগী তার পিত্তথলির পাথর অপারেশনের জন্য আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন। তার দাবি, অপারেশনকারী ডা. আমিরুল ইসলাম অভিজ্ঞ চিকিৎসক। তিনি কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের আবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক। ভুল চিকিৎসায় নয়, মূলত ফিরোজা খাতুন হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক আমিরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গেছে। কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, সকালে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে অভিযোগ না থাকায় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। ভুক্তভোগীর স্বজনরা অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের একটা সংবাদ শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।