ডন ডেস্ক:-
কুষ্টিয়ার খোকসায় ডাকাতদলের মধ্যে মতবিরোধের জেরে দুই সহযোগীকে হত্যা করে বালুচাপা দেয় দলের ১৫ সদস্য। পরে ওইদিন রাতেই পৌর এলাকার ব্যবসায়ী অশোক তার ভাই অসিম পালের বাড়ির তালা ভেঙে ভেতরের সব লুট করে নিয়ে যায় ডাকাত দলের সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকেলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম খোকসার ডাকাতি ও জোড়া খুনের রহস্য উন্মোচনের খবর প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। গত ২০ ও ২১ জুন খোকসার ওসমানপুর ইউনিয়নের গড়াই নদের চর এলাকা থেকে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রেসবিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, খোকসা বাজারের ব্যবসায়ী অশোক এবং তার ভাই অসিম পালের বাড়িতে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে গত ১৭ জুন দিনগত গভীর রাতে ১৭-১৮ জনের একটি ডাকাত দল গড়াই নদের আইয়ুবের ঘাট চরে একত্রিত হয়। ডাকাতির পরিকল্পনার এক পর্যায়ে দলের সদস্য সামাদ ও ফারুকের সঙ্গে ডাকাত দলের অন্য সদস্যদের কথা কাটাকাটি হয়। মতবিরোধের কারণে এসময় ক্ষিপ্ত হয়ে সামাদ এবং ফারুককে জবাই করে হত্যা করে। পরে ওই লাশ বালুচাপা দেয় ডাকাত দলের সদস্যরা।
পরিকল্পলা অনুযায়ী ওইদিন রাত আড়াইটার দিকে খোকসা পৌর এলাকার ব্যবসায়ী অশোক এবং অসিম পালের বাড়ির তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা এবং স্বর্ণালংকার সব লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ১৭ জুন দিনগত আড়াইটার দিকে খোকসা বাজারের ব্যাবসায়ী অশোক এবং তার ভাই অসিম পালের বাড়িতে ডাকাতি করে নগদ টাকা এবং স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে যায় ডাকাত দল। এই ঘটনার পরের দিন অসিম পাল বাদী হয়ে খোকসা থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।ডাকাতির ঘটনার পরে গত ২০ এবং ২১ জুন স্থানীয়দের দেওয়া সংবাদের ভিত্তিত্বে খোকসার ওসমানপুর ইউনিয়নের গড়াই নদের চর এলাকা থেকে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ দুটি ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে কাজ শুরু করে খোকসা থানা পুলিশ। সাথে যোগ দেন জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। পুলিশ সুপার বলেন, কঠোর তদারকি এবং প্রযুক্তির সহায়তায় গত মঙ্গলবার রাতে রাজবাড়ীর পাংশা এবং কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতাররা হলেন—রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার বসা গ্রামের মনছের মন্ডলের ছেলে মতিয়ার মন্ডল (৪৭) ও তার ভাই শান্ত মন্ডল (২০) কুষ্টিয়ার খোকসা থানার ওসমানপুর কলপাড়া এলাকার মজিদ শেখ এর ছেলে সাহস শেখ (২১) একই উপজেলার খানপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে রয়েল হোসেন (২১) এবং বসোয়া গ্রামের দুলাল প্রমানিকের ছেলে শুকাই আলী প্রমানিক (২৫)। গ্রেফতারের পর তাদের হেফাজত থেকে লুট করে নিয়ে আসা স্বর্ণালংকারসহ বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ডাকাতির কথা স্বীকার করতে গিয়ে খোকসা গড়াই নদে উদ্ধার হওয়া দুই ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা করে বালু চাপা দিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে গ্রেফতার ওই ৫ ডাকাত।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, মূলত মতবিরোধের কারণে ডাকাত দলের সদস্য কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের দৌলতখালি গ্রামের হুরমত আলীর ছেলে সামাদ (৩৩) এবং ময়মনসিংহ জেলা জামালপুর থানার মোলান্দহ গ্রামের বিপ্লব মৃধার ছেলে ফারুককে (২৮) তার সহকর্মীরা গলা কেটে হত্যা করে। লাশ গুম করার জন্য চরের মধ্যে বালুচাপা দেওয়া শেষে তারা ডাকাতি করতে যায়। বুধবার বিকেলে গ্রেফতার ৫ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।