রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
কুষ্টিয়া শিলাইদহ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ডিগ্রী কলেজ সরকারি করনের দাবি কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার আসামী ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কারাগারে ভূমিদস্যুরাই এখন বিচারহীন অপরাধী দুই এএসআই হত্যা: আসামি ধরতে গিয়ে ফের পুলিশের ওপর হামলা কুষ্টিয়ায় নিজের গলাই ছুরি চালিয়ে বৃদ্ধার আত্মহত্যা কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবা-মা ও মেয়ের মৃত্যু চোখের পানি ধরে রাখতে পারছি না বুক ফেটে যাচ্ছে ফায়ার ফাইটার মেহেদী আজাদ ডুবুরি না হয়েও জিবনের ঝুঁকি নিয়ে পানির নিচ থেকে লাশ উদ্ধার করে আগামীকাল থেকে ৩দিন ব্যাপী লালন স্মরণোৎসব শুরু কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়ায় দুই গ্রুপের ব্যাপক গোলাগুলি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বজ্রপাতে নারীসহ চারজনের মৃত্যু

মিরপুর সাব—রেজিস্টি অফিসে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

Reporter Name / ১৭৪ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৩, ১:০০ অপরাহ্ন

নিজস্ব সংবাদদাতা:-

মিরপুর সাব—রেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। যাঁরা আসেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আসেন। এখানে ফেরেশতা আসলেও টাকা দিতে হবে। ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন সাব—রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা আশরাফুল হায়দার, তাঁর শ্বশুর মঞ্জুরুল ইসলাম তিন মেয়ের নামে দুর্গাপুর এলাকার সাড়ে চার কাঠা জমি লিখে দেবেন। কোনো সমস্যা নেই জমিতে, তারপরও সাব—রেজিস্ট্রারের জন্য আলাদা করে ৯ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছেন অফিস স্টাফ মন্জু। দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলা সাব রেজিস্টার অফিসের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তুলেছেন খোদ দলিল লেখক ও সেবা প্রত্যাশীরা তাদের দাবি টাকা ছাড়া রেজিস্ট্রি হয় না অপকর্ম গোপন রাখতে বহিরাগত এক ব্যক্তিকে দিয়ে অফিসের গোপন নতিসহ অর্থ লেনদেনের কাজ করান রেজিস্টার রাসেল মল্লিক। জমি রেজিস্টি করতে গিয়ে জটিলতা হতে পারে তাই সেবা গ্রহীতারা সবকিছু মেনে নেন নীরবে। নিবন্ধন বাতিলের ভয় রয়েছে দলিল লেখকদেরও। বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জমির ক্রেতা—বিক্রেতা, দলিল লেখক আর দালালের প্রচণ্ড ভিড় ভেতরে। সাব—রেজিস্টি কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা ব্যক্তিরা জানান, দালালেরা নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে সহজেই জমি নিবন্ধনের কাজ করিয়ে দেন। কাগজপত্রে সমস্যা থাকলেও ঠিকমতো যাচাই করা হয় না। আর দালাল ছাড়া গেলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়, ঘুরতে হয় মাসের পর মাস। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সাব—রেজিস্ট্রি অফিসের সাবেক কেরানি আতাউল ইসলামের ভাই রাজিব অফিসের সব অবৈধ অর্থ লেনদেন দেখাশোনা করেন তিনি। দলিল রেজিস্ট্রির সময় কোন দলিল লেখক কয়টি দলিল রেজিস্ট্রি করতে এসেছেন তা রেজিস্টারের পাসে বসে লিস্ট করেন সাব—রেজিস্টারের সহকারী। অফিসের কাজ শেষে সাব—রেজিস্টার রাসেল মল্লিক বাসায় যাবার পূর্বে রাজিবকে পাঠান লিস্ট করে রাখা প্রতিটি দলিল লেখকদের থেকে ঘুষের টাকা ওঠাতে। এমনটি অভিযোগ করেন মিরপুর সাব রেজিস্টার অফিসের দলিল লেখকেরা। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে মিরপুর সাব—রেজিস্ট্রার রাসেল মল্লিক পরিচয় জানার পর কিছু বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজিব বলেন, আমি নিয়োগকৃত না তবে এখানে সাব রেজিস্টার রাসেল মল্লিক স্যারের নির্দেশে এসছি। এদিকে মিরপুর টাকা ওঠাতে। এমনটি অভিযোগ করেন মিরপুর সাব রেজিস্টার অফিসের দলিল লেখকেরা। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে মিরপুর সাব—রেজিস্ট্রি অফিস সহকারী মজিবর রহমান বলেন, রাজিব দীর্ঘদিন ধেও সাব—রেজিস্টার স্যারের সঙ্গে থাকে আমাদের সঙ্গে কাজ করে এভাবেই তাকে চিনি, সে আমাদের অফিসার কর্মচারী না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলিল লেখক বলেন, আমরা সবাই সব জানি কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারি না বলতে গেলেই লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়ার ভয় দেখান, দলিল লেখকদের শোকেস করেন সাব—রেজিস্টার রাসেল মল্লিক। লাইসেন্স বাতিল করলে পেটের দায়ে মরতে হবে তাই চুপ থাকতে বাধ্য হয়। তারা আরও বলেন এক অফিসারের উপর আরেক অফিসার আছে, তার উপরে আছে আরেকজন, কেউ কারোর ধরাছোঁয়ার বাহিরে নয়। এই ঘুষ বাবদ আদায় করা অর্থ ভাগ করে নেন সাব—রেজিস্ট্রার রাসেল মল্লিক সহ অফিসের কর্মকর্তা—কর্মচারী। অভিযোগ আছে, কুষ্টিয়া মিরপুর সাব—রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখকদের জিম্মি করে দলিল রেজিস্ট্রি সময় বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে সাব—রেজিস্ট্রারের খরচ দিলে ঠিক হয়ে যাবে এমন অজুহাতে বাড়তি টাকা নেন। দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ জমির দলিল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দলিল লেখকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৪ সালে আইন মন্ত্রণালয় থেকে দলিল লেখকদের পারিশ্রমিকের হার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু দলিল লেখকেরা সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে সেবাগ্রহীতাদের থেকে ইচ্ছেমতো টাকা নিচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দলিল লেখক বলেন, দলিল রেজিস্ট্রি করতে আসা ব্যক্তিদের নামের অক্ষরে সামান্য ভুল থাকলে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্র গ্রহণ না করলেও প্রতি নাম ভুলের জন্য ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ ঘুষ দিলে সব ঠিক হয়ে যায়। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই।
মিরপুর দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দরা বলেন, দলিল লেখকরা বাধ্য হচ্ছেন রেজিস্ট্রি করতে আসা মানুষদের কাছে বেশি টাকা নিতে। কারন অফিস শেষ হলেই শেরেস্তাই দলিল প্রতি টাকা নিতে চলে আসেন রাজিব। এই ভাগ না দিলে হবে না দলিল রেজিস্ট্রি, সুধু তাই নয় এই ঘুষ দিতে অস্বীকার করলে দলিল লেখকদের নিবন্ধন বাতিল করে দেওয়ার হুমকির সম্মুখে পড়তে হচ্ছে প্রায়ই আমাদের। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাব রেজিস্টার রাসেল মল্লিক বলেন, আমার উপর আনিত এ সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, নামের ভুলের ক্ষেত্রে কোর্টের এফিডেভিট ব্যতীত আমি দলিল রেজিস্ট্রি করবো না। এদিকে কুষ্টিয়া জেলা সাব রেজিস্টার লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর ....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর