ডন ডেস্ক:-
কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ আজমল গণি (আরজু) এর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
কুষ্টিয়ায় এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ আজমল গণি (আরজু) এর বিরুদ্ধে। কলেজের শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা এই অভিযোগ তুলেছেন। অনুসন্ধানেও তার অনিয়ম দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেছে। বোর্ড নির্ধারিত সরকারি ফি ব্যাতিত অতিরিক্ত এক হাজার ১২০ টাকা (১১২০৳) জনপ্রতি আদায় করা হচ্ছে। এই কলেজ থেকে ২০২৪ সালে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮২০ জন। সেই হিসাবে দেখা যায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ৯ লাখ ১৮ হাজার ৪০০ টাকা (৯,১৮,৪০০)৳ আদায় করেছে। কলেজের অধ্যক্ষ আজমল গণি শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করে অতিরিক্ত ফি আদায় করে আসছেন। প্রভাবশালী হওয়ায় তার অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পান না শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। জানা যায়, ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফি বিজ্ঞান শাখায় ২ হাজার ৬৮০ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ২ হাজার ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের নৈর্বাচনী বিষয়ে এবং চতুর্থ বিষয়ে ব্যবহারিক থাকলে বিষয় প্রতি আরও ১৪০ টাকা যুক্ত হবে। কিন্তু কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজে বিজ্ঞান শাখায় ৩ হাজার ৮০০ টাকা (৩৮০০)৳ এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৩ হাজার ২৪০ টাকা (৩২৪০)৳ আদায় করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ৪ এপ্রিল এইচএসসি পর্রীক্ষার ফি বিষয়ে কুষ্টিয়া সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ আজমল গণি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা আছে- বিজ্ঞান শাখায় নিয়মিত (সেশন চার্জ ব্যতীত) ৩ হাজার ৮০০ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় (সেশন চার্জ ব্যতীত) ৩ হাজার ২৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এবং প্রতিজন শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে এক হাজার ১২০ টাকা বাড়তি আদায় করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে কলেজের অধ্যক্ষ আজমল গণি। তিনি ভর্তির সময়ও অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে এবং কি একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরিক্ষার সময়ও তুলনামূলক (৫০০-৬০০)৳ বেশি টাকা আদায় করেছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে প্রতিজন এইচএসসি পরিক্ষার্থীদের কাছে থেকে ১ হাজার ১২০ টাকা (১১২০)৳ করে বাড়তি আদায় করেছে। কি কারণে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে তা আমরা জানি না। আমরা অনেক কষ্ট করে, ধারদেনা করে ফরম ফিলাপ করেছি। দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করেছে, অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অনিয়ম দুর্নীতি কিরে আসছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
বাড়তি টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ আজমল গণি বলেন, কলেজ পরিচালনা করতে অনেক খরচ হয়। এজন্য বাড়তি টাকা নেয়া হয়েছে। নিউজটি করার দরকার নেই। আমি আপনার সাথে দেখা করবো। নানাভাবে এই প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন তিনি।
এবিষয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. আহসান হাবীব বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতীম শীল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার কাছেই শুনলাম। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো। কেউ অতিরিক্ত টাকা আদায় করলে বা কোনো অনিয়ম দুর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।