কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি:-
দেশব্যাপী বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের কারণে পূর্ব থেকে নিযুক্ত আউটসোর্সিং নিরাপত্তা কর্মীরা কাজে যোগ দিচ্ছে না। এতে চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে ৫’শ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভবনসহ গোটা হাসপাতাল চত্বর। সরেজমিন হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, জনমানব শুন্য সেখানে সবকিছুই এখন অরক্ষিত অবস্থায় আছে। মূল গেট সংলগ্ন নিরাপত্তা কর্মী কক্ষটিতে তালা ঝুলছে। সদ্য নির্মাণ সম্পন্ন হওয়া হাসপাতাল চত্বরটিতে দৃষ্টি নন্দন করে তোলার সাজ সরঞ্জামসহ নানা ধরনের সরঞ্জামাদি যে কোনো সময় খোয়া যেতে পারে বা অনিষ্ট হয়ে যেতে পারে। এখনো কাজে ফেরেননি পুলিশ কর্মকর্তারা এখনো কাজে ফেরেননি পুলিশ কর্মকর্তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানায় জরুরি ভিত্তিতে ভেঙে পড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সচল করতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে হাসপাতাল ভবনের বর্হিবিভাগের সামনে কুষ্টিয়া আনসার ভিডিপির সার্কেল অফিসার আবুল কাশেমের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের জন্য জেলা আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট দপ্তরে আনসার নিয়েগের অনুরোধ পত্র প্রেরণ করেছেন। ওই বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে এসেছি যে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা সুরক্ষার আয়তন কতটুকু এবং কত সংখ্যক আনসার সদস্য লাগতে পারে। তার একটা সম্ভাব্যতা যাচায় করে সংখ্যা নির্ধারিত হবে। প্রাথমিক ভাবে যতটুকু বুঝেছি তাতে গোটা হাসপাতাল চত্বরের নিরাপত্তার জন্য ন্যূনতম ৮০জন আনসার সদস্য নিয়োগ দিতে হবে। এখানে নিয়োগ প্রাপ্ত আনসার সদস্যদের প্রতিজনের প্রতিদিন সাকুল্যে প্রায় ৬শ টাকা হিসেবে মাসে বেতন দিতে হবে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এই পরিস্থিতিতে কার্যত গোটা হাসপাতাল চত্বরই অনিরাপদ হয়ে গেছে। এদিকে আউটসোর্সিং এ যারা কাজ করত তারা হঠাৎ করে কাজে না ফেরায় শর্তানুযায়ী ওই জনবল ঠিকাদারের সাথে করা চুক্তিও বাতিল হয়ে গেছে। এই অবস্থায় নিরাপত্তা ফেরাতে ইতোমধ্যে ৭০জন আনসার সদস্য নিয়োগ চেয়ে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সুরক্ষা বিভাগে পত্রপ্রেরণ করা হয়েছে। মন্ত্রনালয় এসব আনসার সদস্যদের বেতন বাবদ অর্থ বরাদ্দসহ আনসার নিয়োগের বিষয়টি অনুমোদন করলেই ভেঙ্গেপড়া নিরাপত্তা সচল হবে। অন্যথায় হাসপাতাল ভবনের চিকিৎসা ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ কোটি কোটি টাকার মালমাল চরম ঝুঁকির মধ্যেই থাকবে। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করে ৩ বছরের প্রকল্প বাস্তবায়নকাল দাঁড়িয়েছে ১৩ বছরে। অন্যদিকে পৌঁনে ৩’শ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যায় বৃদ্ধি পেয়ে ঠেকেছে ৭’শ কোটি টাকায়। এতদসত্ত্বেও ভোগান্তি যেন পিছু ছাড়ছে না কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। গেলো বছর ১৪ নভেম্বর কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলেও কোন অদৃশ্য কারণে ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও ৫’শ শয্যার হাসপাতালে ইনডোর চিকিৎসা আজও চালু হয়নি। এতে এখানকার শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে পাঠ গ্রহণ ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে বিপুল পরিমান রাষ্ট্রীয় অর্থব্যয়ে নির্মিত এ অঞ্চলের ৪টি জেলার জনগণের একমাত্র উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হতে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী সেবা বঞ্চিত হচ্ছে।